পাপু লোহার , বুদবুদ:- তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব একেবারে প্রকাশ্যে , পানাগড় শিল্পতালুকে রাস্তায়ত্ত এক গ্যাস সংস্থার সামনে ধুন্দুমার কান্ড, সিন্ডিকেটের লড়াই , আর যে লড়াইয়ে জড়ালো শাসকের দুই গোষ্ঠীর ক্ষমতা জাহিরের লড়াই । যাকে ঘিরে বুদবুদ থানায় আছি বিশাল পুলিশ বাহিনীকে ছুটে আসতে হলো পরিস্তিতিকে সামাল দিতে। ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। এই রাস্তায়ত্ত গ্যাস সংস্থার সম্প্রসারনের কাজের বরাত পায় ভিন জেলার এক এজেনসি, আজ সকালে কর্মীদের নিয়ে কাজ করতে এলে তাদের বাঁধা দেওয়া হয় সংস্থার গেটের ভেতর,নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করে এই আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিতে থাকে কোনোভাবে বাইরের লোকজনদের নেওয়া যাবে না, এমনকি সম্প্রশারণের কাজে ব্যবহৃত র মেট্রিয়াল নিতে হবে স্থানীয় দের কাছ থেকে। এইদিকে আন্দোলনকারীদের আটকাতে তখন শাসক দলের আরো এক গোষ্ঠী প্রতিবাদ জানাতে থাকে কোনো ভাবে শিল্পতালুকে কাজ আটকানো যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় ঐ গোষ্ঠীর লোকজন, যারাও আবার নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে দাবি জানাতে থাকে। নিমেষে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, দু পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হতে হতে সংঘর্ষ বেঁধে যায়, ভাঙচুর হয় শিল্পতালুকে থাকা বেশ কয়েকটি দোকান। বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে দু পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোনোভাবে তারা শান্ত হয়নি উল্টে ঐ ঠিকাদার ও তার লোকজনকে সংস্থার ভেতরে ঢুকতে দিতে তারা বাঁধা দেন, এই সময় পুলিশের সাথে বচসা শুরু হয়ে যায় আন্দোলন রত তৃণমূল কর্মীদের একাংশর সাথে বচসাই পড়ে মহিলারাও। পরে পুলিশের মধ্যস্ততায় ছ জনকে ঢুকতে দেওয়া হয়, কিন্তু স্থানীয়দের বঞ্চিত করে বহিরাগতদের নিয়ে ফের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারী দেন আন্দোলোনকারীরা। নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করে আন্দোলনকারিরা অভিযোগ করেন দলের এক গোষ্ঠী অসৎ উপায়ে কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করছে,আর প্রতিবাদ করতে গেলেই অশান্তি পাকাচ্ছে। যদিও পাল্টা গোষ্ঠীর লোকজন যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে ওরা দলের কেউ নয় বলে পাল্টা দাবি করে স্লোগান শুরু করে, স্লোগান পাল্টা স্লোগানে অশান্তি আরো বাড়ার উপক্রম তৈরী হয়, দু পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। গোটা ঘটনায় দুর্গাপুরের পানাগড় শিল্পতালুকে টানটান উত্তেজনা। এইভাবে অশান্তি হওয়াটা শিল্পের জন্য বাঞ্চনীয় নয় বার্তা ঠিকাদারের। নতুন করে অশান্তি এড়াতে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। যদিও এই ঘটনায় আউসগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।

তৃণমূল নেতা জগবন্ধু বাউরি বলেন, নিয়ম মেনে ঠিকাদার কাজের বরাদ পেয়েছেন। তিনি কাজ করতে এলে কিছু মানুষ তাদের বাধা দেয়। আর বহিরাগতদের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সামান্য উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পরে, তা মিটে গিয়েছে। আমরা চাই, যে ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন, তিনি যাতে সুষ্ঠভাবে কাজ করতে পারেন। আউসগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি শেখ আব্দুল লালন জানিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা উন্নয়নে বাধা দিতে এসেছিল, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয় গেটের সামনে বিজেপির কর্মীরা বাধা দেয় । তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনভাবে আটকানো যাবে না উন্নয়নের স্বার্থে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি জ্যোতির্ময় বাগদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে অস্বীকার করলেও জ্যোতির্ময় বাগদি নিজের মুখে তিনি বলেছেন তিনিও তৃণমূল করেন ও নবনিযুক্ত ব্লক সভাপতি মদতে ই তার অনুগামীরা ঝামেলার সৃষ্টি করছে । বিজেপি নেতা রমণ শর্মা বলেন, শিল্পতালুকে গোষ্ঠী কোন্দলে নতুন নয়। আর টাকার বিনিময়ে কারখানায় নিজের লোক ঢোকানো হয়। বিরুদ্ধ গোষ্ঠীদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। এবার সেই ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূলের কোন্দলের জেরে প্লান্টের কাজ না বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে সিপিএমও কটাক্ষ করে বলছে যে সরকারের পুলিশ প্রশাসন সেই সরকারেরই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পুলিশ প্রশাসনকে আজ মার খেতে হচ্ছে।
