নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা – দেখতে দেখতে বছর পার। এখনও মেলেনি স্কুলের দুয়ার। তাই এবছরও রাস্তাতেই কাটল শিক্ষক দিবস। রাজপথে বসেই শিক্ষক দিবস পালন করলেন হবু শিক্ষকরা। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির নীচে SLST চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না-অবস্থান ৯০৫ দিনে পড়ল। চাকরিপ্রার্থীদের আক্ষেপ, আজকের দিনটা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্কুলে কাটানোর কথা, সেখানে আড়াই বছর তাঁদের দিন-রাত কাটছে রাস্তায় বসে।
কতদিনে চাকরি হবে? দীর্ঘদিন ধরে চলছে অবস্থান-বিক্ষোভ। দফায় দফায় পথে নেমেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কাতর আবেদন শোনা গিয়েছিল নবম থেকে দ্বাদশের SLST-র চাকরি প্রার্থীদের গলায়। সমস্ত আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন একটাই, আর কতদিনে চাকরি হবে? বিজেপি বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’-র তৃতীয় বৈঠকে যোগ দিতে চলতি মাসের শেষে মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেদিন মুম্বই থেকে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কিলোমিটার দূরে, কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কাতর আবেদন শোনা গিয়েছিল নবম থেকে দ্বাদশের SLST-র চাকরি প্রার্থীদের গলায়।
২০১৬ সালের নভেম্বরে SSC-র SLST পরীক্ষা হয়। এক বছর পর ২০১৭-র নভেম্বরে পরীক্ষার ফল বেরোয়। এর পর ধাপে ধাপে সফল পরীক্ষার্থীদের ভেরিফিকেশন ও ইন্টারভিউয়ের প্রক্রিয়া শেষ হয়। এই পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও, গোল বাধে এর পরেই! আন্দোলনকারীদের দাবি, ২০১৮ সালের মার্চে নবম-দশম এবং নভেম্বরে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ করা হয়। আর সেখানেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আন্দোলনকারী তথা ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। প্রথম দফায় ভেরিফিকেশন ও ইন্টারভিউ দিলেও, দ্বিতীয় দফায় যাঁরা ইন্টারভিউ দিয়েছেন, তাঁদের চাকরি আগে হয়ে গিয়েছে। আর এখান থেকেই শুরু হয় যত জটিলতা।
এরপরের অধ্যায় চলতে চলতে চলে এসেছে বর্তমান সময়ও। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের পরিস্থিতি এখনও বদলাইনি। তাঁদের মাথার ওপরে সেই গান্ধীমূর্তি। এক একটি করে দিন পেরিয়ে যাচ্ছে বুকে আশা নিয়ে। আর নিরাশায় রয়ে যাচ্ছে সেই চোখের জলটুকুই।