নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা – ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া হল কংগ্রেসের। ঝালদা পুরসভার পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় এবং আরও চার কংগ্রেস কাউন্সিলর বুধবার যোগ দিলেন তৃণমূলে। ফলে আবার সমীকরণ বদলাচ্ছে ঝালদা পুরসভায়। এবার পুরপ্রধান ও চার কংগ্রেস কাউন্সিলর ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়ায় ঝালদা পুরসভা তৃণমূলের দখলে চলে এল। নির্দল কাউন্সিলর তথা ঝালদার পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও কংগ্রেস কাউন্সিলর বিজয় কান্দু, মিঠুন কান্দু (নিহত তপন কান্দুর ভাইপো), পিন্টু চন্দ্র ও সোমনাথ কর্মকার বুধবার তৃণমূলে যোগে দেন।
আর ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া হতেই দলের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তিনি বলেন, “কংগ্রেস কর্মীরা এইরকম ভাবেই প্রতিবার দলকে ডোবায়। পুকুর, নদীর গল্প শুনতে গিয়ে এই ভাবেই সবকিছু হাতছাড়া হয়। আর কৌস্তভ বাগচি তো দলবিরোধী লোক, দলের বিরুদ্ধেই কথা বলে সে। আর সেই জন্যেই তাঁর মুখপাত্রের পদ বাতিল করে দেওয়া হয়। কৌস্তভ বাগচি তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটা শব্দ উচ্চারণ করলেই তাঁকে হেনস্থা করা হবে। তৃণমূল ঘনিষ্ঠদেরকে দিয়েই তাঁকে হেনস্থা করা হবে। কিন্তু কি পরিণতি হতে পারে তৃণমূলের সঙ্গে থাকা, তা আজ আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। বাংলার বুকে একটিই সক্রিয় পুরসভা ছিল কংগ্রেসের। তাও আজ তৃণমূল কেড়ে নিল। দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর সাথে ছবি তোলা হবে আর এরাজ্যে কংগ্রেসকে ভেঙে টুকরো টুকরো করা হবে এই হল এদের স্বভাব। কংগ্রেসকে সাইনবোর্ডে পরিণত করা হবে এই রাজ্যে। নেপাল মাহাতো কষ্ট করে যে পুরসভা গড়েছিলেন, আজ তাও হাতছাড়া হয়ে গেল। তৃণমূলের সাথে ঘর করা আর বিষধর সাপের সাথে থাকা বিষয়টা একই। আমাদের দলের নেতৃত্ব এরপরও যদি না বোঝেন, তা হলে ভবিষ্যতে কংগ্রেসের জন্যে এই ঘটনা অন্ধকার ডেকে আনবে। আজ সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। কংগ্রেস কর্মীরা চিৎকার করে বলছে তৃণমূলের সাথে সমঝোতা চাই না। এরপরও দলের নেতৃত্ব তা শুনতে না পেলে আমার কিছু বলার নেই”।
উল্লেখ্য, ঝালদা পুরসভায় মোট ১২টি আসন রয়েছে। পুরভোটের সময়ে প্রথমে পাঁচটি করে আসন জিতেছিল তৃণমূল ও কংগ্রেস। বাকি দুটি আসন জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থীরা। শীলা চট্টোপাধ্যায় ও সোমনাথ কর্মকার। বোর্ড গঠনের জন্য ম্যাজিক ফিগারের প্রয়োজন ছিল সাত। প্রথমে দুই নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করে ফেলেছিল তৃণমূল। কিন্তু পরবর্তীতে শীলা চট্টোপাধ্যায় ও সোমনাথ কর্মকার শাসক শিবিরের থেকে সমর্থন তুলে নেন এবং সোমনাথ যোগ দেন কংগ্রেস শিবিরে। যদিও শীলা চট্টোপাধ্যায় নির্দল হয়েই থেকে গিয়েছিলেন শুরু থেকেই। এদিকে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রেও আবার শীলার সঙ্গে সমঝোতা হয় কংগ্রেসের। কংগ্রেসের তরফে শীলাকে পুরপ্রধান করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং পাল্টা শীলাও কংগ্রেসকে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে সমর্থন করেছিল।
এবার সেই পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্য়ায় ও চার কংগ্রেস কাউন্সিলর যোগ দিলেন তৃণমূলে। আর ঝালদা পুরসভা গেল তৃণমূলের দখলে।