নিজস্ব প্রতিনিধি , পশ্চিম বর্ধমান – যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। শুধু যাদবপুর নয়, আই আই টি খড়্গপুর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও উঠে এসেছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে ঘুম উড়েছে রাজ্যবাসীর। এইসব জল্পনার মধ্যেই পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে ঘটে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। দুর্গাপুরের বি সি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে উদ্ধার হয় এক ছাত্রের ঝুলন্ত পচা গলা দেহ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে , মৃত ছাত্রের নাম সৌরভ কুমার। কম্পিউটার সাইন্স এবং ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্র বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা। পড়াশোনার সূত্রেই বাংলায় এসেছিলেন, থাকতেন কলেজের বয়েজ হস্টেলেই।
এপ্রসঙ্গে বি সি রায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ডিন জানিয়েছেন , গত ২১ শে আগষ্ট তাকে শেষবারের মতন দেখা গিয়েছিলো কলেজ এবং ক্যাম্পাস চত্বরে। ২২শে আগস্ট অনুপস্থিত ছিল সে। তাকে হস্টেলে না পাওয়ায় স্থানীয় এলাকায় চালানো হয় খোঁজখবর। ২৩শে আগস্ট পর্যন্তও তার খোঁজ না মিললে কলেজ থেকে খবর দেওয়া হয় ছাত্রের বাড়িতে। খবর পেয়ে ছাত্রের বাবা মা আসেন এবং স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। শেষপর্যন্ত ২৪শে আগস্ট ছাত্রকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন কলেজের হাউস কিপিং স্টাফ।
খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ। ছাত্রের পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার হয় কলেজের বয়েজ হস্টেলের চারতলার একটি ঘর থেকে। এই চারতলায় থাকেন না কোনো ছাত্র। মেরামতির কাজ চলছে বর্তমানে। কলেজের ডিনের মতে, মৃত ছাত্র সৌরভ অন্তর্মুখী স্বভাবের, বন্ধুসংখ্যা একেবারেই নগন্য। হস্টেলেই কেবল দু একজন বন্ধু রয়েছে।
সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা মা। আদেও কি এটি স্বেচ্ছামৃত্যু নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য চক্রান্ত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অন্তর্মুখী স্বভাবের একটি ছেলে কেনই বা হঠাৎ আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে তা নিয়ে চিন্তায় ছাত্রের কলেজ থেকে পরিবার। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে উঠে আসছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু রীতিমতো চিন্তা বাড়াচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষের।