নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা – ২০১৪ সালে ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা। তারপর থেকে কয়েক কোটি অ্যাকাউন্ট এই প্রকল্পের আওতায় খোলা হয়েছে। সেই সংখ্যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ কোটি ছুঁই ছুঁই। প্রধানমন্ত্রীর মুখেই একাধিক বার শোনা গেছে জন ধন যোজনার ‘গুনগান’। কিন্তু শুধুই কি কথার কথা? কারন অ্যাকাউন্ট তো ফাঁকা। তথ্য বলেছে এমনটাই।
সূত্রের খবর অনুযায়ী তথ্য বলছে, চলতি মাসেই জনধন প্রকল্পের আয়তাভুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা প্রায় ৫০ কোটির কাছাকাছি। কিন্তু তার মধ্যে সাড়ে ৪ কোটি অ্যাকাউন্টেই কোনও টাকা জমা নেই। মানে অ্যাকাউন্ট যেন ‘গড়ের মাঠ’। আর প্রায় ১০ কোটি অ্যাকাউন্টে গত দুই বছর যাবত কোনো রকম লেনদেন হয়নি। আর যা সংখ্যা বাকি থাকল তাতে সব মিলিয়ে জমা অর্থের পরিমাণ ২ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকা। ৫০ কোটি অ্যাকাউন্টে গড়ে যা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে চার হাজার। যে টাকার পরিমাণ লাখে হবার কথা।
এই ‘হতাশাজনক‘ তথ্যের পরেও জনধন যোজনা নিয়ে বারবার উচ্ছসিত হতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তিনি তাঁর একাধিক সভায় এই প্রকল্পের গুনগান করতে ছাড়েননি। এমনকি সোমবার দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন নবম বার্ষিকীতে দাবি করেছেন, “৯ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা -এর নেতৃত্বে ডিজিটাল ব্যবস্থায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। স্টেকহোল্ডার, ব্যাঙ্ক , বিমা কোম্পানি এবং সরকারি আধিকারিকদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ এটি দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে।”
তার কথায় , এই যোজনার ফলে ৫০ কোটিরও বেশি মানুষকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে ৷ যার ফলে ক্রমবর্ধমান জমা আমানত ২ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে ।
কিন্তু সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি দেশের বেকারদের আশার আলো এই জনধন প্রকল্প? মূলত ভারতের অধিক সংখ্যক জনগণের কাছে এই ব্যাঙ্কিং সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই যোজনা শুরু করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। তবে তা সফলভাবে কার্যকর হয়েছে বলা হবে তখনই যখন এই প্রকল্পের আওতায় থাকা অ্যাকাউন্টগুলি সক্রিয় থাকবে। জানা যাচ্ছে, গত ১৬ আগস্ট পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী মোট জনধন অ্যাকাউন্টের ৮ শতাংশে একটিও টাকা জমা নেই। যা গত একবছরে এক শতাংশও কমেনি। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে, জনধন যোজনা কি আদৌ ততটা কার্যকরী?