নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া – সাংসদ অথবা বিধায়ক হওয়া মানেই মাসে মাসে হাজার হাজার বা লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার? আর এই টাকার লোভেই কি বহু সাংসদ, বিধায়কদের নিজেদের পুরাতন জীবনকে ভুলে যেতে দেখা যায়? তবে সেটা মানুষ মাত্র নিরররভর করে। অন্তত বিধায়িকা চন্দনা বাউড়ি তা হাতেনাতে বুঝিয়ে দিলেন। নিজের কাজের জন্যে নজর কাড়লেন বাঁকুড়ার শালতোড়ার বিধায়িকা চন্দনা বাউড়ি। তাকে ফের দেখা গেল দিনমজুরের ভূমিকায়।
চন্দনা বাউড়ির স্বামী শ্রাবণ বাউড়ি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। আর তাকে জোগাড়ের কাজে সাহায্য করতেন চন্দনা বাউড়ি। ২০২১ সালে চন্দনা বাউড়িকে বাঁকুড়ার শালতোড়া থেকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। সেই নির্বাচনে তিনি জয়যুক্ত হয়ে বিধায়িকা হন। প্রথম থেকেই চন্দনা বাউড়ি নজর কেড়েছিলেন মূলত নিজের ন্যূনতম সম্পত্তি এবং বিধায়িকা হয়ে কি কি কাজ করবেন তার পরিপ্রেক্ষিতে। আর এবার ওই বিধায়িকাকেই দেখা গেল দিনমজুরের কাজ করতে রাস্তা সারাইয়ের জন্য।
বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করার পরই চন্দনা বাউড়িকে বলতে শোনা গিয়েছিল, এলাকার রাস্তা খারাপ এবং সেই রাস্তা তিনি ঠিক করাবেন। কিন্তু তার অভিযোগ, এই রাস্তা সারাইয়ের জন্য বারবার স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানানো হলেও তা করা হয়নি। এখানে বিজেপি জয়লাভ করেছে বলেই তৃণমূলের তরফ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। তবে এই সকল অভিযোগের পাশাপাশি তিনি এবার তার স্বামীকে নিয়েই দিনমজুরের কাজে নেমে পড়লেন এবং রাস্তা সারাইয়ের কাজ করলেন।
চন্দনা বাউড়ির বাড়ি গঙ্গাজলঘাঁটির কেলাই গ্রামে। সেখানকার রাঙামেট্যা থেকে কেলাই হয়ে রাজামেলা গ্রামে যাওয়ার মূল রাস্তা দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল। ওই রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরেই বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। সবথেকে খারাপ অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় বর্ষাকালে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়ায় যে যেকোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। চন্দনা বাউড়ি দাবি করেছেন, তিনি নিজের বিধায়ক তহবিলের টাকা দিয়ে এই রাস্তা সারানোর জন্য চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু শাসকদলের চাপে স্থানীয় প্রশাসন সেই কাজ করতে দেয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে তিনি বাধ্য হয়েই নিজের বেতনের টাকা থেকে কিছু পাথর গুঁড়ো কিনেছেন বলে দাবি করেছেন। আর সেই পাথর গুঁড়ো নিজে বেলচাতে করে ঝুড়িতে ভরে মাথায় করে গর্তে ফেলে গর্ত বোজাচ্ছেন। বিধায়িকার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন তার স্বামী শ্রবণ বাউড়ি। এর পাশাপাশি স্থানীয় কয়েকজন বিজেপি কর্মীও এই কাজে হাত লাগিয়েছেন। যা প্রশংসা কুড়িয়েছে স্থানীয়দের কাছ থেকে। যদিও তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, সবই নাটক আর প্রচারের জন্য এমনটা করেছেন তিনি। অবশ্য তৃণমূলের এই কথায় কান দিচ্ছেন না গ্রামের বাসিন্দারাই।