নিজস্ব প্রতিনিধি , নদীয়া – গত মঙ্গলবারে নদীয়ার একটি স্বনামধন্য সোনার দোকানে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রায় কোটি কোটি টাকার সোনা লুট হয়। এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এই গ্রেফতারির কাজ সহজ হয়নি। রীতিমত বলিউড স্টাইলে গুলির লড়াই চালিয়ে ধরতে হয়েছে ওই চারজনকে। আর তাতে ছিলেন নদীয়ার রানাঘাট থানার এসআই রতন কুমার রায়। তাঁর গুলিতেই আহত হন ডাকাত দলের এক সদস্য। আর এই ঘটনায় রীতিমত সুপার হিরোর তকমা পেলেন তিনি।
সূত্রের খবর , ২৭ বছর বয়সে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন রতন কুমার রায়। প্রথমে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে অংশগ্রহণ করেন। এরপর নিজের কর্মদক্ষতা এবং কর্তব্যে অবিচল রেখে প্রমোশনের মধ্য দিয়ে এসআই হন তিনি। তার ২৭ বছরের চাকরি জীবনে অনেক ঘটনা সাক্ষী থাকলেও এইভাবে ডাকাত দলের সঙ্গে গুলির লড়াই আগে কখনো করেননি তিনি। মঙ্গলবার সোনার দোকান থেকে তার কাছেই প্রথম ফোনটা আসে। এরপর একমুহুর্ত সময় নষ্ট না করে তিনজন কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই রওনা দেন গাড়িতে করে সোনার দোকানের উদ্দেশ্যে।
তবে সেখানে ইতিমধ্যেই ডাকাতের দল তাদের কর্মকাণ্ড সেরে নিয়েছে। এরপর দোকান থেকে বের হতেই এসআই রতন কুমার রায়ের সম্মুখীন হয় ডাকাতের দল। চলে দুপক্ষের গুলির লড়াই। বেশ কিছুদিন গুলির লড়াই চলার পর শত্রু পক্ষকে ঘায়েল করেন এসআই।নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবং সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তার রিভলবারের গুলিতেই নিশানা লাগিয়ে জখম করেন ২ ডাকাতকে। ততক্ষণে অবশ্য খবর পেয়ে আরো পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তার লড়াইয়ের সেই ছবি ভাইরাল হতেই প্রশংসায় কুড়িয়েছেন ৫৪ বছর বয়সী রতন কুমার রায়। শোনা গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তার এই সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন।
এ বিষয়ে এসআই রতন কুমার ঘোষ বলেন, “যখন আমার কাছে খবরটা এসেছিল আমি তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলাম। নিজের জীবনের কথা তখন মনে ছিল না। একটাই কথাই মাথায় এসেছিল। পুলিশের কিছুতেই বদনাম হতে দেব না। পালানোর কোন প্রশ্নই ছিল না। পালাতে গেলে হয়তো একটা বুলেট আমার পিঠে এসে লাগতো। আমি দেখতেও পারতাম না কে আমাকে গুলি করলো। তাই লড়াই করে গিয়েছিলাম।”