নিজস্ব প্রতিনিধি , দিল্লি – গোটা বিশ্বের বুকে ইতিহাস তৈরি করে গত ২৩ শে আগস্ট সন্ধ্যা ৬.০৩ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল ভাবে অবতরণ করেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। অবতরণের পর থেকেই ইতিমধ্যেই রোভার প্রজ্ঞান দুর্বার গতিতে তথ্য সংগ্রহের কাজ চালাচ্ছে। সেই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েই চমকে দেওয়ার মতো দৃশ্য পেয়েছিল ইসরো। বিক্রম ও প্রজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলাকালীন কেঁপে উঠেছিল চাঁদের রুক্ষ মাটি। অর্থাৎ শুধু পৃথিবী নয় , চাঁদেও ভূমিকম্প হয়। এরমাঝেই চাঁদে ১০০ মিটার পথ অতিক্রম করে সেঞ্চুরি গড়েছে প্রজ্ঞান। কিন্তু তারপর চাঁদের মাটিতে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হলো রোভার প্রজ্ঞানকে।
এবিষয়ে গোটা তথ্য প্রকাশ করেছে ইসরো। এদিন ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে , বর্তমানে চাঁদে রাত নেমেছে। সেই কারণেই এখন মিশন চালানোর রিস্ক নিচ্ছে না তারা। পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান চাঁদের ১ দিন। তাই হিসেব মতো আগামী ২২শে সেপ্টেম্বর চাঁদে আবার দিন শুরু হবে। অর্থাৎ সেদিন চাঁদে সূর্যোদয় হবে। সূর্যোদয় হলে রোভারকে আবার জাগানোর চেষ্টা করা হবে। বর্তমানে চার্জ ফুল করেই প্রজ্ঞানকে স্লিপিং মোড়ে রাখা হয়েছে।

তবে ইসরো আশা করলেও প্রজ্ঞান নতুন করে স্লিপিং মোড় থেকে বাইরে আসতে পারবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যদি রোভার আর জেগে না ওঠে সেক্ষেত্রে মিশন এখানেই শেষ , সঙ্গে চাঁদের বুকে হারিয়ে যাবে ল্যান্ডার বিক্রম সহ রোভার প্রজ্ঞান। তবে রোভারকে জাগিয়ে তোলার সব রকম ব্যবস্থা করেই রেখেছে ইসরো। সূর্যোদয় হলেই যাতে আলো সোলার প্যানেলে আসে তার জন্য প্যানেলকে সেই ভাবেই সেট করা হয়েছে।
এদিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে চালাতে চাঁদের উষ্ণতাও পরীক্ষা করেছিল রোভার প্রজ্ঞান। এই মুহূর্তে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ৪০-৪৫ ডিগ্রির আশেপাশে। অর্থাৎ পৃথিবীর থেকে সামান্য বেশি। আবার চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ সেন্টিমিটার গভীরে তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রি। অর্থাৎ এটা খুব অস্বাভাবিক বিষয়। তথ্য পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছে , চাঁদে প্রতি ২০ মিলিমিটার গভীরে বিভিন্ন রকমের তাপমাত্রা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চাঁদের এই মাটি পরীক্ষার জন্য ইসরো ‘চেস্ট যন্ত্র’ ব্যবহার করছে। সবমিলিয়ে ১১ দিন ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রীতিমতো ময়নাতদন্ত চালিয়েছে ইসরো।