নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা- অবশেষে বিধানসভায় পেশ হল পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় রাজ্যের তরফে ২০ জুনের পরিবর্তে পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব রাখা হয়। বলা হয়, কেন্দ্র একতরফা ভাবে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করে। তাই এই দিনটি পরিবর্তনের দরকার রয়েছে। আর এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে শুভেন্দু সাফ জানান যে কেন্দ্র কিছুতেই মানবে না।
এদিন ভোটাভুটির আগেই শুভেন্দু অধিকারী সাফ জানান, “রাজ্য বিধানসভায় এই প্রস্তাব পাশ হলেও কেন্দ্রের সরকার তাকে মান্যতা দেবে না। তারপর পশ্চিমবঙ্গের নাম বঙ্গ করতে গিয়ে তৃণমূলের যা হয়েছিল সেই অবস্থা হবে।” সঙ্গে বলেন, “এই প্রস্তাব তো রাজ্যপালের কাছে যাবে।” শুভেন্দুর মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, “কারোর অনুমতির দরকার নেই। আমরা পয়লা বৈশাখেই প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করব।”
কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠেছে শুভেন্দু কেন আগেভাগেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কথা বললেন? আসলে এর উত্তর জানতে গেলে একটু পিছনে যেতে হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০১৮ সালে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ করতে চেয়ে প্রস্তাব আনা হয় বিধানসভায়। সেই প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়াও বিধানসভার তরফে। এরপর তা যায় সংসদে। কিন্তু আপাতত সেখানেই শেষ হয়েছে এই বিষয়। কারন অনুমোদন পাওয়া যায়নি। সুতরাং রাজ্যের নাম পরিবর্তন এখনও ঝুলেই রয়েছে। এবার সেই প্রসঙ্গ টেনেই শুভেন্দু বলেন, এই প্রস্তাবও ‘বাংলা’ নামের প্রস্তাবের মতোই হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে ২০ জুন ভারত ভাগের বিষয়টি আলোচনায় আসে। ভোট হয় অখন্ড ভাগের পক্ষে। এরপর বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ নামে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে তৎকালীন অখন্ড ভারত। আর তৃনমূলের দাবি, ২০ জুন ভারত বাংলাদেশ ভাগ হয়ে যায়। দেশভাগের যন্ত্রনা নিয়ে আপনজনদের ছেড়ে আসতে হয় বাধ্য হয়ে। আর তাই ওই দিন কিছুতেই আনন্দের হতে পারে না। এজন্য পশ্চিমবঙ্গ দিবস বদলানো দরকার। আর তাই এদিন পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় বিধানসভায়।